বঙ্কিমচন্দ্র | অর্জুন বন্দ্যোপধ্যায়
প্রণীত
শেষপর্ব
(মনে হয়) এক প্রান্তরের দেশে চলে গেছি আমরা
পশ্চিমের লাল সূর্য যেখানে চাষার মতো তার শেষ বোমা রাখে
—‘অনেক বছরের ধূসরতার ভিতর দিয়ে’, জীবনানন্দ দাশ
Objects
in the mirror are closer than they appear
ছাব্বিশে জানুয়ারি এসে পড়ল। আর
দুদিন বাকি।
কিন্তু জঙ্গলমহলে কোনও মাওবাদী এখনও এল না। কলকাতায়
কদিন আগে একরাতের মধ্যে অত পোস্টার কারা লাগাল তারও কোনও হদিশ করতে পারেনি পুলিশ।
কোন প্রেস থেকে সেগুলো ছাপা হয়েছে তাও জানা যায়নি। জন্ম
মৃত্যু উৎসব নিজের খেয়ালে চলছে। আগামী
দুদিনের মধ্যে জঙ্গলমহলে যেকোনও রকম আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য তৈরি রাষ্ট্রের রাইফেল।
চব্বিশে জানুয়ারি সকালে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রীর বিরাট এক কনভয়
যাবে দক্ষিণ কলকাতার রাজা এস সি মল্লিক রোড দিয়ে। সেইসময়ের
জন্য পুরো রাস্তা ট্রাফিক মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। সব
গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে অন্য দিকে। প্রচুর
পুলিশ।
ওবি ভ্যান। ক্যামেরা।
সাংবাদিক। চারদিকে
‘পথ বন্ধ সব বন্ধ নেতা আসছেন নেতা আসছেন’ ব্যাপার।
‘শাদা পোশাকে ইনফর্মার’
আর ‘হাতে বন্দুক পায়ে বন্দুক দেহরক্ষী’
সব মিলে পুরো রাস্তা এবং এলাকাটার ওপর দিয়ে শান্ত সুশীতল এক
‘পুলিশ-পুলিশ গন্ধ’ বয়ে যাচ্ছে।
এসবের মধ্যে যা আমরা জানতে পারি না, তা হল এই
যে, দক্ষিণ শহরতলির বিজয়গড় পল্লীশ্রীর রাস্তা দিয়ে নিরীহ একটি
অ্যাম্বুলেন্স আসে সেই সময়। ওঁয়াও
ওঁয়াও শব্দ তুলে।
গাড়ি চালাচ্ছিল কালো চামড়ার এক ছিপছিপে যুবক। পেছনে
শুয়ে অন্তঃস্বত্ত্বা একটি মেয়ে। তার
প্রসবকালীন চিৎকার শুনে পল্লীশ্রীতে সেই সময় ডিউটিরত ট্রাফিক সার্জেন ছেড়ে দেন গাড়িটিকে।
রাণীকুঠির রাস্তা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি সোজা এসে ওঠে বাঘাযতীন মোড়ে।
কনভয় ছুটছে তখন রাজা এস সি মল্লিক রোড ধরে। বাঘাযতীন
মোড়ে ট্রাফিক সিগনাল আটকে দেয় অ্যাম্বুলেন্সটিকে। কিন্তু
গাড়িটির দৃঢ়চেতা ছিপছিপে কালো যুবক সে সিগনাল মানবে কেন?
সে তো সোজা মেরে দেবে কনভয়ের পেটে। বুম।
বিস্ফোরণ। শব্দ।
কালো ধোঁয়া। আগুন।
ধুলো।
আতঙ্ক।
গুজব।
ক্যামেরার ঝলসানি। ত্রাসে
ছুটন্ত মানুষ।
ফরেন্সিক টিম। বম্ব স্কোয়াড।
ডগ স্কোয়াড। র্যাফ। লাঠিচার্জ।
টিয়ার গ্যাস। সেদিন রাতেই পল্লীশ্রীর
ডিউটিরত সেই ট্রাফিক সার্জেনকে স্বরাষ্ট্র সচিব এবং মুখ্যমন্ত্রীর তলব।
সাসপেন্ড। ট্রাফিক সার্জেনের বিবরণ
মতো বিস্ফোরণ স্থলে বা ওই অ্যাম্বুলেন্সে কোনও কালো চামড়ার ছিপছিপে চেহারার যুবকের
লাশ পাওয়া যায়নি।
এমনকি কোনও অন্তঃস্বত্ত্বা মহিলার লাশও, না।
পাওয়া যায়নি। কে সত্যি বলেছে?
কে মিথ্যে? কে জড়িত? ভোররাত
থেকেই গোয়েন্দা দপ্তরের কাছে খবর আসতে শুরু করে, উত্তর শহরতলির
বাগুইআটি, উত্তর ২৪ পরগণা, খড়দহ,
টিটাগড়, ব্যারাকপুর, কলকাতার
বেলেঘাটা, মানিকতলা, নদিয়ার শান্তিপুর,
হাওড়ার বালি ও জগদীশপুরে মাওবাদী দেখা গেছে।
এই সবকটি জায়গায় ঘরে ঘরে খুঁজেও পুলিশ কিন্তু কারও নাগাল পায়নি।
পুলিশের অন্দরমহলে, বিশেষত নিচুতলায় একটা
কথা চাউড় হয়ে যায়, এটা পুরোটাই ভূতের কাণ্ড।
কারণ
(১) একরাতের মধ্যে গোটা কলকাতায় অতগুলো পোস্টার
কারা লাগালো? কীভাবে সম্ভব করল তারা এই কাজ?
কারণ (২) পল্লীশ্রীর
ট্রাফিক সার্জেনের কথা মতো অ্যাম্বুলেন্সে কাউকে পাওয়া গেল না কেন? তাহলে কি সত্যিই ভূতে চালাচ্ছিল গাড়ি? ভূতের লাশ তো আর
পাওয়া সম্ভব নয়।
কারণ (৩) কলকাতা
এবং তার আশপাশের যে অঞ্চলগুলিতে মাওবাদী দেখতে পাওয়ার খবর এল, সেসব জায়গার কোত্থাও কাউকে খুঁজে পাওয়া গেল না কেন?
কারণ (৪) বিস্ফোরণ
ঘটার পর তিনদিন পেরিয়ে গেলেও কেউ এখনও অবধি ঘটনার দায় স্বীকার করেনি।
এরও দু দিন পর কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে ফ্যাক্স আসে রাজ্য গোয়েন্দা
দপ্তরের হাতে।
সেখানে তারা স্পষ্ট জানায় জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ঝাড়খণ্ডের গুরাবান্দায়
যে মাওবাদী বৈঠক এবং ছাব্বিশে জানুয়ারি বা তার আগে বেলপাহাড়ি এলাকায় পুলিশ থানা বা
সিআরপিএফ ক্যাম্প আক্রমণের যে খবর তারা পেয়েছিল এবং রাজ্য পুলিশ ও গোয়েন্দা দপ্তরকেও
তা জানিয়েছিল, সেটা ফেক নিউজ ছিল।
পুরোটাই ভুয়ো। পুলিশ,
গোয়েন্দা ও রাষ্ট্রকে বিভ্রান্ত করার জন্যেই এরকম একটি খবর মাওবাদীরা
ইচ্ছাকৃতভাবেই ফাঁস করিয়েছিল। যাতে
সবার ফোকাস থাকে জঙ্গলমহলে। তদন্তে
উঠে আসে আরও নানা বিচিত্র তথ্য। অধিকাংশই
অদ্ভুতুড়ে।
বিশ্বাসযোগ্য নয়। সেদিন
যে অ্যাম্বুলেন্সটি কনভয়ে ধাক্কা মেরে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল,
ওই নাম্বারের কোনও গাড়ি নাকি বর্তমানে আর নেই।
তবে, ওই একই নাম্বারের একটি গাড়ি ছিল,
হ্যাঁ ছিল, আজ থেকে চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশ বছর আগে। নকশাল
পিরিয়ডে।
সেদিন ওই অ্যাম্বুলেন্সটি চালাচ্ছিল বীরসা মুণ্ডা নামে এক যুবক।
আর গাড়িতে অন্তঃস্বত্বা মেয়েটি ছিল প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ওরফে মিলি।
এবং এই পুরো নাশকতার মাস্টার প্ল্যান ক্ষুদিরাম বসুর।
কোনও মানেই হয় না এসব বাজে ইয়ার্কির। মানে
নেইও।
জীবিত বা মৃত কোনও অবস্থাতেই পুলিশ এঁদের কাউকে ধরতে পারেনি।
পারার কথাও নয়। পুলিশের
খাতায়, ইতিহাসের পাতায়, যৌথ জ্ঞানে ও নির্জ্ঞানে
এঁরা সবাই মৃত। ফলে পুরো ঘটনাটিই ভূতের
কাণ্ড বলে ফাইল ক্লোজ করে দেয় রাজ্য ও কেন্দ্রের গোয়েন্দারা। বাহিনীতে
এবার প্রেতচর্চায় দক্ষ কর্মী নিয়োগ করা হবে কিনা, ভাবা হচ্ছে। যদিও
সারা রাজ্য জুড়ে সোচ্চার দাবি ওঠে ‘ক্ষুদিরাম
বসুর আবার ফাঁসি চাই’।
পুনশ্চঃ প্রত্যক্ষদর্শী
দুজন রিকশাঅলা এবং
বোতলকুড়ানি একটি বাচ্চা
ছেলের মুখে জানা
যায়, বিস্ফোরণের
পর একটা বাজপাখি
দেখা গেছিল আকাশে, চক্কর দিয়ে
গেছে কয়েকবার।
কৃতজ্ঞতা
অঘ্রাণের অনুভূতিমালা—বিনয় মজুমদার | অন দ্য কালচারাল ফ্রণ্ট—ঋত্বিককুমার ঘটক | অভিধর্ম পিটক | অমিয়ভূষণ মজুমদার | অর্ক চট্টোপাধ্যায় | অর্ঘ্য দত্তবক্সী | অরিট গিদালি (ইস্রায়েল) | অরুণমিত্র | অরুণেশ ঘোষ | অস্তনির্জন দত্ত | আগুনপাখি—হাসান আজিজুল হক | আঠার শতকের বাংলা গদ্য : চিঠিপত্রে কিছু নতুন প্রমাণ—দেবেশ রায় (সম্পা:) | আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া | আরশিনগর লালন আশ্রম (ধলুয়াবাড়ি, কোচবিহার) | আলাপচারি রবীন্দ্রনাথ—রানী চন্দ | আলি আবদোলরেজ়ায়েই (ইরান, ইউ.কে) | ইন্ডিয়া আফটার গান্ধী: দ্য হিস্ট্রি অব দ্য ওয়ার্ল্ডস্ লার্জেস্ট ডেমোক্র্যাসি—রামচন্দ্র গুহ | ইন্দ্রনীল ঘোষ | ইম্পসিবিলিটি—দ্য লিমিটস্ অব সায়েন্স, দ্য সায়েন্স অব লিমিটস্—জন ডি বরো | ইয়ান জুন (চীন) | একজন সন্দীপন (দাহপত্র সংকলন, মিনিবুক ১) | কাঙাল মালসাট, খেলনা নগর, যুদ্ধ পরিস্থিতি—নবারুণ ভট্টাচার্য | কারিক | কো কো থেট (মায়ানমার) | কোমলগান্ধার—ঋত্বিককুমার ঘটক | কবীর সুমনের গান | কলিকাতা সেকালের ও একালের--হরিসাধন মুখোপাধ্যায় | কলিকাতার পুরাতন কাহিনী ও প্রথা—মহেন্দ্রনাথ দত্ত | গিলি হাইমোভিচ (ইস্রায়েল) | গোয়ালপাড়িয়া লোকগান | জীবনানন্দ দাশের কবিতা | জর্জ বিশ্বাস-এর গান ও কথা | জাঁ-নিকোলাস-আর্তুর র্যাঁবোর কবিতা | জাঁ-পল সার্ত্রের নব্য মার্ক্সবাদ—সতীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী | যুক্তি তক্কো আর গপ্পো—ঋত্বিককুমার ঘটক | তন্ময় ধর | দ্য আনবেয়ারেব্ল লাইটনেস অফ বিয়িং—মিলান কুন্দেরা | দ্য ক্রিটিক অব্ ডায়ালেক্টিকাল রীজন—জাঁ-পল সার্ত্র | দ্য টিবেটান বুক অব দ্য ডেড | দ্য বেল জার—সিলভিয়া প্লাথ | দ্য সেভেন্থ সীল—ইঙ্গমার বার্গম্যান | দ্বিগ্বিজয় প্রকাশ—কবিরাম | দেবাঞ্জন দাস | দুশো বছরের বাংলা নথিপত্র—ত্রিপুরা বসু | ন্যাশনালিজম ইন ইণ্ডিয়া—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | নিজের পায়ে নিজের পথে—ঋত্বিককুমার ঘটক | নিষিদ্ধ দেশে সওয়া বৎসর—রাহুল সাংকৃত্যায়ন | নীলাঞ্জনা সরকার | নীলাব্জ চক্রবর্তী | নজওয়ান দরবিশ (প্যালেস্তাইন) | নবেন্দুবিকাশ রায় | প্রাচীন বাংলা পত্র সংকলন—সুরেন্দ্রনাথ সেন | পারহাম শাহরজের্দি (ইরান, ফ্রান্স) | ব্যাক গীয়ার—কৃষ্ণগোপাল মল্লিক | বঙ্গভাষা ও সাহিত্য—দীনেশচন্দ্র সেন | বাক্ (পত্রিকা) | বাঙালীর ইতিহাস—আদিপর্ব—নীহাররঞ্জন রায় | বার্ট্রাণ্ড রাসেল | বিদ্যাপতি | বিদ্যুৎ রায় | বিয়িং অ্যান্ড নাথিংনেস—জাঁ-পল সার্ত্র | বুদ্ধদেব বসু | বৃন্দাবনলীলা | মারি কাশিওয়াগি (জাপান) | মিলিন্দ প্রশ্ন | মিশেল কন্ট্যাট-কে ১৯৭৫ সালে দেওয়া সার্ত্র-এর সাক্ষাৎকার | মৈনাক পাল | মরিয়ম হুলিহ্ (ইরান) | মল্লার (পত্রিকা) | মহাভারত—রাজশেখর বসু কৃত | রাইটিং অ্যান্ড ডিফারেন্স—জ্যাক দেরিদা | রোজা জামালি (ইরান) | রণজিৎ দেব | রেঁনে দেকার্ত | লোডশেডিং—অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় | শ্রীকৃষ্ণকীর্তন—বড়ু চণ্ডীদাস | শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা | শক্তিগীতি—রামপ্রসাদ সেন | শার্ল বোদল্যের-এর কবিতা | শারন হাস্ (ইস্রায়েল) | শুভময় সরকার | স্যার লক্ষ্মীকান্ত পাধি | সাঈদ হবিবল্লাহ্ লজগী (লীডস বিশ্ববিদ্যালয়) | সার্ত্র—১৯৬৪ সালে নোবেল পুরষ্কার ঘোষণার পরদিন তা প্রত্যাখ্যান করে সুইডিশ প্রেস-প্রতিনিধির কাছে যে বক্তব্য রেখেছিলেন | সাশা অরোরা আখতার (পাকিস্তান, ইউ.কে) | সোফিয়া পাণ্ডিয়া (পাকিস্তান, আমেরিকা) | সোমতীর্থ নন্দী | সহস্রাব্দ (পত্রিকা)
উপন্যাসের দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম এবং চতুর্দশ পর্বের শিরোনামগুলি যথাক্রমে অরুণেশ ঘোষ, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রামপ্রসাদ সেন এবং আমার একটি কবিতার লাইন থেকে নেয়া।
চতুর্থ পর্বে ব্যবহৃত কবিতাংশটি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঈশ্বর থাকেন জলে’ বইয়ের ‘তুমি আছো—ভিতের উপরে আছে দেয়াল’ কবিতা থেকে নেয়া।
সপ্তম পর্বে কমলকুমার যে গল্পটি বলেন (অন্ধকার সংক্রান্ত) সে গল্পের মূল ভাবনাসূত্রটি এসেছিল সোমতীর্থ নন্দীর একটি লেখা এবং আমার লেখা গল্প ‘রসো’ থেকে।
দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম, ষষ্ঠ, ত্রয়োদশ এবং পঞ্চদশ পর্বের শিরোদেশে উদ্ধৃত কবিতাংশগুলির অনুবাদ আমার।
দ্বাদশ পর্বে ‘ঋত্বিক-নবারুণ কথোপকথন’ এবং ‘বুদ্ধ-রবীন্দ্রনাথ কথোপকথন’ এই দু’টো কথোপকথনে যথাক্রমে ঋত্বিকের কিছু সাক্ষাৎকার এবং ‘সূত্র পিটক’, ‘অভিধর্ম পিটক’, ‘মিলিন্দ প্রশ্ন’ ও রানী চন্দের ‘আলাপচারি রবীন্দ্রনাথ’-এর বিভিন্ন বিচ্ছিন্ন অংশ উৎস-সূত্র হিসেবে এসেছে। যা থেকে কিছু অনুস্থাপন এবং কিছু কল্পিত কথন দিয়ে কথোপকথন অংশটি গড়া।
উপন্যাসের শেষে দেওয়া ছবিটি আমি পেয়েছিলাম যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের
২নং গেটের বিপরীতে একটি প্রিন্ট এবং জেরক্সের দোকানে, যা তাদের সুবিশাল জেরক্স মেশিনের ওপর পড়েছিল। উপন্যাসের পাণ্ডুলিপির প্রাথমিক খসড়া প্রিন্ট করাতে গিয়ে আমি এটা পেয়েছিলাম। ছবিটি দেখে আমার এটাই মনে হয়েছিল যে, এই সেই শহরের নিশ্চল ও শুকনো মানচিত্র যেখানে এই উপন্যাসের প্রত্যেকটা চরিত্র হেঁটে বেড়াচ্ছে, এবং যে মানচিত্রের প্রতিটি জায়গাই অ্যানোনিমাস, আন্নেমড্। মূল ছবিটির বেস-কালার অবশ্য কালো ছিল না।
বহু মানুষ, বই, চলচ্চিত্র, লেখা, চিঠিপত্র, রিপোর্ট, ধর্মগ্রন্থ, পুথি, সাক্ষাৎকার, পত্র-পত্রিকা, পুরনো সংবাদপত্র, খবরের শিরোনাম ইত্যাদি বহুকিছু থেকেই এই উপন্যাসের অনেক জায়গার ভাবনাসূত্র, প্রণোদনা ও উৎপ্রেক্ষা আমি দু হাত ভরে নিয়েছি, গ্রহণ করেছি। করতে হয়েছে। আমি চেষ্টা করেছি সেই সমস্ত কিছুর উল্লেখ এখানে ‘ঋণ ও কৃতজ্ঞতা’ স্বীকারে অন্তর্ভুক্ত রাখতে। কোনও দর্শন অথবা রাজনৈতিক চিন্তা, এমনকি তা যদি কোনও শব্দও হয়। যদি কেউ বা কোনও কিছু এরপরেও উল্লেখ না হয়ে থাকেন/থাকে, যদি এরপরেও কিছু বাদ পড়ে যায়, তবে তিনি/তা এইমুহূর্তে এইখানে অন্তর্ভুক্ত হলেন/হল।—লেখক
No comments:
Post a Comment