জার্নাল
রত্নদীপা দে ঘোষ
কোচবিহার, নোঙরতোর্সাতীর ...
ঠিক তারপরেই চোখে। রোদটাও। ই থেকে আত্তুখানি ছোট। ঈ থেকে সামান্য ডানদিকে হাঁটলেই ইয়া বড় একটা রেফসহ। সেও দারুণ নারকেল-লজেন্স মিশ্রিত তারিফের.।
এক্কা থেকে লুডোপাহাড়। ভুটানঘাট। মরীচিকা একটু ঝাঁকিয়ে দিলেই মেঘ। আমার গ্রামাঞ্চল। নিজস্ব শীতকালীন। পাথরকুচি পাতার নম্রতা। খুবরঙের। ছড়াছড়ি। ডাকাডাকি। কে বলে সূর্য উঠলে বৃষ্টি হয় না? হয়তো এ’ভাবেই বাজপাখি। রাজাপাখি। বাতাসের রাজা।
জন্মাচ্ছি সবে। পেট থেকে যখন খসে পরছি মায়ের। ঠিক তখনকার মৃগশিরা আমার। গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বড় হয়ে ওঠা দোপাটি। রাশির শৃঙ্গটি রাস। মেলায় ফোঁটা মার্বেলপ্রাসাদ। জানি। ছোঁয়াচে খুব। সেই ম ম। চিরকালীন মা মা। ওঠাবসার ভঙ্গিমা। পঞ্চমুখী। শালিখজোড়া। উঠোনগাঁদা আর কলাবতী।
খেলা সামলাও। লালপুতুল বিয়েপুতুল। পুতুলঘরের খেলনালাট্টু। দোল দেবে কে? দোল খাবে যে ...
তিনজন মাত্র শ্রমিক , একজন রানী। হাতময় হাঙরমুখো বালা। সেই বালাটির পরিধি। আমার সমগ্র বাল্যকালের পরিমিতিকেও ছাড়িয়ে যায়। যেমন।
দোল বড় হলে পূর্ণিমা। চাঁদ ওঠে ছাদের মাথা ঝাঁকিয়ে। সাদা কার্ভ। সবুজ রিবন। দাদু-ঠাকুমার একান্ত। একান্তে অবন। ঠাকুররঙের ঘর। স্থাপত্যের উড়ান। বাদলবাউল। আদতে এক অনন্ত মারমেড। পাখিজগত। রূপবান সব রূপকের গলি-অলি- ঘরানা। মাটি ফুঁড়ে যে বীজটি কলমকারি তার জ্যোৎস্নারম্ভে। প্রারম্ভের কন্দমুল। শেকড়টিকে স্পর্শ করলেই বোঝা যায় চার ক্রোশ নীপবীথি। রোমন্থন। আদুরেপন।
তখন আমি ম্যানগ্রোভ তখন আমি এনামেলের কলোনি। উড়বো কী করে বুঝতে ... না বুঝতেই থোকা। থোকা কিশোরকদম্ব। আমায় ঘেরাও করে।
ঋতু পাই। আমি ঋতু হই। বসন্তসই। সেনাবসনের বসন্তে আঘাত। ভাঙি। ভেঙে ভেঙে তীব্র আরশি।
সৌর-আবর্ত আমাকে আয়না। দর্পণে আমি নিষিদ্ধ। । মুকুটে মণিতে দণ্ডী কাটা আর ফুরায় না। ফুরোবে কী করে? দণ্ডীগুম্ফাটি আঁকড়ে থাকি যে। ফস করে জ্বলে তো উঠি। কিন্তু নিভতেও সময় লাগে না বেশি। দীর্ঘ উচাটনের শাম্ভবী। পথরেখার মুখটিতে আমি।
শেষপাতে এসে লজ্জা আর লাবণিকে শুধাই।
পাই? পাইনা? পানামুক্ত হতে হবে আমায়? একাসারসের কি রাজ্যসম্ভার থাকতে নেই? ভয় হয় ... যদি কেউ শুনে ফেলে... ভয় করে ...
সাদা-সাদাটে শ্বাসকষ্ট। যদি ফিকে করে দ্যায় ব্রঙ্কাসের টর্চালো।
কলকাতা, ঠাসবুননে যাদবপুর
যেন মুক্তিডুব। ডুবের মুক্তি। আবেগকল্প কুঁড়ি। আগুন আর বরফ। একইসাথে। প্রথম হোস্টেলজীবন। গোছামউমাছির চাক। মধুবান্ধব। বন্ধুঘেরা নেশাদার।
ইতিহাস। আমার প্রিয় অশ্ব এবং আসক্তির অশ্বশক্তি। নিজেকে খুঁড়ে খুঁড়ে যদি পাওয়া যায় হরপ্পা। মহেঞ্জোদারো। স্নানঘরের প্রলেপ। যদি প্রাপ্তবয়স্ক দ্রুমদল ভেদ করে পাওয়া যায় পৃথিবীশ্রেষ্ঠ মৌজাটির পায়ের ছাপ। যদি ছাপ ভেদ করে আরও আলোকিত। লৌকিক-তামসের অন্ধকারপ্রিয়তা। বিপ্লব যদি বিদ্রোহের অট্টহাসিতে ফেটে পরে। এইসব যদির খোঁজেই আমার ছাপোষা ইচ্ছাতরী। ভাসালেম।
জিনাত। জিনাত। তখন আমার আঠারো। ফুরফুরে আমন।
চিয়ার্সের কানের লতি। চুমুকশুদ্ধ মুছে যাচ্ছে তিস্তাচুমুক। মধ্যবৃত্ত পাড়বৃন্ত। হোস্টেলবাস ঢুকে পড়ছে রক্ত ফাটিয়ে। সাথে সোল্লাসের কচুরি আর সন্দেশ। বুঝতে পারছি। জলখাবার মাত্র এ জীবন। লটারি-বিস্তৃত। অবরোধ পার হওয়া হাড়গোড়। মিছিলের সুষুম্না। মেরুদন্ডের মেরুকরণ।
বড্ডসিগার পাই। জুঁইসিগার। সিগা
... রেটের পাইনাপেল টেস্ট। কত কিছুর যে স্বাদ নেওয়া হয়নি ... একদিন আনারসের নতুনখণ্ডটি রটে যায়। দূরধোঁয়ায়। কুণ্ডলীর আঙ্গুলিমায়।
শরীর এতখানি হাল্কা। যেন অতীন্দ্রিয়। মার্লবোরর চাইতেও ভারী।
বিয়ারের আঙুর। ব্লেডের কাচে আনত দিচ্ছে পুরুষমাছ ধরার চ্যালেঞ্জ। স্বাদ নেওয়া যাক গাঁজার। সাধনায় বসি। অ্যানথ্রপোলজির ছিলিম। ওরে খাস না ... খাস না। চল যাই মিলনদার ক্যান্টিন, ওখানে ধোঁয়াও বড় সতেজ ... বড় নির্মল... মারিজুয়ানা নামের এক নিপাট ঠেক-ফেরতা ভদ্রলোক। একটার পর একটা ঝিলপাড়। তাঁতের চুড়িদার। বনমানুষের মুরগিধরা। ফাঁদ। নির্জন। নিরজনে জিন্সমালিকা।
স্কিন-টাইট বন্ধুতা ফুঁড়ে। বন্ধুরাও কখনো সখনো সময় সুযোগ বুঝে হুক টানাটানি। কফিটেবিলের হাল্কা উত্তেজনায়। উড়ে যায় লম্বাঝুলের ব্রেসিয়ার। কান পাতলে তার শব্দও শুনতে পাওা যায় বৈকি। কে যে কোন অসুখে ভর করে দাঁড়িয়ে আছে ... কে যে প্রকৃত আফিম ... কে শুধুই অহিফেন ... আমাকে খুন করার প্রকল্পে জ্বলে উঠছে আমারি প্লট-ফোর।
ওহে ভালবাসা , দ্যাখো কেমন টসটসে তৃপ্তির আন্তিগোনে।
ওহে সূর্য , দ্যাখো ভালবাসা কেমন পরিযায়ী। পরাজিত জয়ীপালক উড়ে আসছে। ওহে পৃথিবী দ্যাখো কেমন টগবগিয়ে ফুটছে টগর আর গন্ধরাজের রাজপাপড়ি ...
ওহে কলকাতার ডাকনাম, দ্যাখো আমি কেমন ছদ্মনামে। মুকুটের মগ্নতায় টোপরের রেলিং ...
পাটনা, প্রবাস এক অবাক-সেন্টিমিটার
হাঁটতে হাঁটতে দেখা প্রবাস। চায়ের ভাঁড়। তৈরি চা-কাপের তেষ্টা। তেষ্টার রঙ মাঝারি মাপের সোনালী। এই প্রথম ন’তলার বারান্দা থেকে মেকিপনার সংসারকে দ্যাখা। সংসার। তখন। একুশের গেরস্থালী। হাতে শাঁখা। পরনে রুলি। গায়ে ঝলক সোনার রূপটান।
রূপালী সিঁদুর। হ্যালো গড়িয়ে যাচ্ছে স্বপ্নের ব্যাটারিতে...
জানালা খুলে দিলেই গঙ্গামাই। বিবসনা। দুধবুক। সেই ছিটে এসে লাগছে আমার ব্যালকনিতে। কুসুম ফুটিয়া নিরালা হতেছি আধবোলের নিরালায়। আতরের জায়ফলে ঝিকিমিকিয়ে উঠছে রান্নাঘর। চৌকাঠ পেরলেই জয়িত্রী আর কাঠবাদামের মালাই। একবাটি এবার। একটু সরবতিয়া হোক লস্যিযোগে। নাকি আধ ডজন যারপরনাই ...
থাক। আজ থাক। সুবর্ণ,
সুরাবর্ণ।
আজ। নাচ আসর। নাচের সা রে গা মা অচেতন। অচেনা নিমন্ত্রন। গরম মজুরীতে ভরে ওঠে পুষ্টিকর চন্দ্রাতপ। নতুন বিবাহের ঘাসলতা। আবাসনের ইমন। ইমনের বারান্দায় ধুলোবৎ। আমি আর তুমির বিলাবল-দম্পতি।
দিব্যি মজা তো! ইঞ্জিনের ঝুড়ি সরিয়ে দিলেই রাগ-দরবার। সুরে সুরে দাউ-দাউ জ্বলে উঠছে ঢেউের আঁটি। গঙ্গাসন্ধ্যায় আলো জ্বলে উঠলে। কোষরোম,
জীবন্ত কোরক ও মাঝি ... সবাই একসাথে আমার পরাণটারে বাঁধে...
মাঝিগো ... আমাকে নিয়ে যাও ... অসীম আজন্মের বাস্তুতন্ত্রে। নূপুরগোনা টলটলে ইশারা আতুর। শরসন্ধানের মুক্তোবিন্দু। মুক্ত হোক আমার প্রতিটি নশ্বরবিন্দু। দেরি ওঠা বায়ুস্তর ভেদ করে...আনমনাটি লিখবো বলেই তো ... আমি ঈশ্বর হতে চাই ... চাইছি হে নিভৃত সুড়ঙ্গ। সম্মোহন খচিত।
ধ্বনিটির সেলাইফোঁড় আসলেই প্রতিধ্বনির হস্তলিপি। সুর্মা টানা ঠিকানা উল্টে যায়। পাল্টে যায় । ওমা ... হঠাৎ দেখি ... সাতলহরী কাঁথাকানি। বেলোয়ারি হরিণখানি ... আমারি পাকে পাকে জড়ানো পাল্কীতোলা ছোটো ছোটো হাইতোলা... রেণু রেণু হাসিক্ষরণ ... আমার চৌখুপি চিকের আড়াল। আবদাল থেকে ছিটকে আসে কান্না পোহানো মঞ্জুরিকা। তাকে শুনতে শুনতে তাকে বুনতে বুনতে অজস্র ছটফট...
থরে থরে সাজানো মধুবনি। চিরকুটের রাজগীর পেরিয়ে।
পালাগানগুলি শোনা যায় না যদি না স্পর্শ করি তার লো ফা লু ফি র মৌ ...
তার অবয়বেই মিশে আছে আমার উত্তরাধিকারের জ্যোৎস্না। চকপেন্সিলের রঙিন তুরুপ।
খেলাখেলি আর বেলাবেলির পরে। তার সাথেই শারদীয় জোনাকিলাগা। রসিকাবিল ভেসে ওঠে নিরুপম অপেরায়। কথা শুরু হয় আমাদের । মেঘকেনা ক্যামেরালতায় নুয়ে। হাতছানির শিস। বলা নেই কওয়া নেই। হঠাৎ অসম্ভব ক্ষমতাবান এক ঘুম। দিনের আলোর মতো স্পষ্ট আর উজ্জ্বল। ঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়ি দু’জনে।
মহাফেজখানা আমাদের ঘুমন্তময়ূখে চুমু রাখে। আদর করে।
চুম্বনে সেঁটে থাকে এক প্রস্থ পৌরাণিক অপত্য।
উম্রাংশু, উশখুশের কুয়াশা ...
কুয়াশার দিকে পাহাড়িয়া। বাড়িয়ে দিলুম নিজেকে।
উজান ঠেলে কুয়াশায় হারিয়ে যাওয়াটা ভারি পরিশ্রমের। কষ্টেরও।
উম্রাংশু। নামটাই একটি মেটাল ফ্রেমে আটকানো টেরাকোটার ঘরোয়া। মেঘালয় রাজ্যের প্লাসেন্টা। এখানে প্রকৃতি ঠিক প্রকৃতির মতন সম্পদময়। এখানে আকাশ ঠিক আকাশের মতোই। সবুজ ঠিক যেন সবুজ। হলমার্ক এখানে সোনার আনারদানা। লাল টকটকে। এখনকার ইছছেগুলিও সব সবুজমার্কা ডিজায়ার। কোনো পরীক্ষা নেই ... অনুশীলন নেই। শুধু সন্দীপন আছে...
সেই দৃশ্য-সন্দীপনের সাথে রাত কাটিয়ে ভালোমানুষের মত ফিরে আসি অদৃশ্য সংসারে। আমার মুখ দেখে কেউ টেরটি পায় না। গোপনে মিলিত হবার ফলে বুকদুটি সামান্য অহংকারী ফুলে রয়েছে। যে কোন ভ্রমর বড় হলে ফুলগাছ স্বয়ং তার বুকে এসে বসে। ঠোকরায়। এতে আর আশ্চর্য কি... তো এমন এক উম্রাংশুতেই প্রথম দ্যাখা কিটসফুল ... মালি বলল ... দেখুন ম্যাডাম ... এইযে ফুল দেখছেন কিন্তু এ ভারি উড়ু-উড়ু ... তাধিনধিন বেজেছে কি বাজেনি দেখবেন কখন যে বেলাবেলির...
বিকেলটি খুলে গিয়েছে অথচ সন্ধ্যে জ্বলে ওঠেনি এমন একটি সময়ে শেষ হয় প্রসাধন ... একটা বড় কালোটিপ কপালের অনেকটা অধিকার করে থাকে। অ্যাসফল্টে জ্যোতিতে আচ্ছন্ন নাভি-এলাকা ...প্রিয় টারবাইন
... শিয়া-সুন্নির রঙ এবং রেখায় খৃস্টপূর্ব দু হাজার বছর আগেকার সাল তারিখ আঁকা... অমরত্বের লিপ আর লাইনার। প্রকৃতির পায়ের মতো প্যাগোডা-ড্যান্স আর কার আছে ...
কিটসফুলের শেলীবৃন্ত। সে যে কি উদ্ধত এবং উদ্যত তা কাছে না এলে টের পাওা যায় না। গুপ্তধনের মন্দির যেন। আজানের আকার। ছন্দযুগ। তামাং পাহারের গ্যালারী। আট মাস ধরে বন্দী যে প্রফদ্যাখা ইথার। রূপ দেখে সে নিজেই হারিয়ে ফেলছে শেষরন্ধ্র।
আঙুল ডুবিয়ে আমিও রাঙাতে চাইছি নিত্যনতুন সিনেমা। আমি চাই।
চিত্রনাট্যের কেন্দ্রীয় চরিত্রটি একদম আমার মনের মতো হোক। প্রায় দু হাজার বছর আগেকার একটা ব্যাকড্রপ থেকে ভেসে আসুক স্থিরচিত্রের সঙ্গীত। স্পটলাইটের মুখ থাকুক আলেয়ায় আচ্ছন্ন। গুরুগম্ভীর আলোকসজ্জার ফুলকি। আগুনের নয়। আঁচের। পর্দায় চৌচির. হোক। প্রেম আর যৌনতার মাঝের বোরখা ...
সাইলেন্স। সাইলেন্স। মুখিয়ে ওঠে উম্রাংশু। গোধূলিপুঞ্জের পার্বত্য নক্ষত্র। সংখ্যাহীন। যেন ভেসে এসেছে অবয়ব-যুগের ওপার থেকে।
আর এইসবের মধ্যে শুরু আরেক হইচই। উম্রাংশু পাহাড়ে ঢুকে পড়লেন তুলিমাখা ভ্যান গখ। সঙ্গে অসাধারণ সুন্দরী তরুণী এক চিত্রশিল্পী। আমার মনে এসে বসছে ভারি ভারি ভারি সব হিংসে। এমন অপূর্ব লোকেশন। দুর্দান্ত মোরাম আর পিচ বাঁধানো রেত। যদি এই রমণীর কাছেই আমার সিনেক্ষমতার হার হয়? যদি হেরে যাই এই মেঘলারমণীর মহাযুগলের কাছে ...
যা ভয় করেছিলাম। ঠিক তাই। আমারি হার হল। ইনডোর শুটিঙের অলিগলি পেরিয়ে। স্ক্রিন টেস্ট আমাকে জানিয়ে দিলো। সফল হইনি। আমারি ছাপার ভুলে। উৎসব থেকে মুছে গ্যাছে এই ফেস্টিভ্যাল। পরে বুঝেছি। আর বুঝেছি।
কুয়াশা আসলে একটা লারনিং এক্সপেরিয়েন্স। অই কিটসফুল। সেই ছবিআঁকা তরুণী। প্রিয় চিত্রনাট্য। ভ্যান গঘ ... সবটাই আসলে উম্রাংশুর ক্লোজশট। বুঝলাম।
কাট। মানে। রাস্তা শেষ।
স্ট্যাচু। অর্থাৎ। টু- গেদার-
নেস।
তোরানাগাল্লু, আকরিক এবং অ্যাক্রেলিক ...
এই মুহূর্তে কাচভর্তি গ্লাসের সরবত।
কর্ণাটকের দু’ফোঁটা গ্রাম ... হা হা ... মাত্র?
তার আবার এতখানি ক্ষমতা ... চল্লিশে দাঁড়ানো বয়েসকে পঞ্চাশ অধিক প্রদীপ্ত রাখে। তরুণতম পরিমার্জন যেন এখানকার আবহাওয়া খচিত নির্মেদ জলবায়ু। জলবায়ুর পেটভরা পাথর। কত রকমের যে পাথরস্পজ্জা। মনচায় কত রকমের। যত রকমের মনচায়না। আশ্চর্য-সঞ্জাত।
অপার শান্ততা।
রুখুসুখু জলহীন। বৃষ্টিনেই। টিয়াপাখির কাঁধে ঝোলা তোতাআকাশ।
আবহাওয়ায় বালির কানকো আর সিমেন্টের মাছ।
এইসব নিয়ে আছি বেশ।
তুমুল রেখেছি। বিভাময় হ্যাভকের শিকার। স্বীকার। স্বীকারোক্তি। যখন রাত ওঠে রাতের মাংসপিণ্ড পেঁচিয়ে। চুপিচুপির আশিরনখ। মুদে আসে ভালোলাগা। দীর্ঘযাওয়া আকরিক সম্ভাবনার। পুষ্পবৃন্ত। না দ্যাখা পরমের পুলক। মাতাল করে আমায়। হারিয়ে যাওয়া ৭ খানি মিনিট। প্রতি আগামীঘণ্টাকে। বাজি রাখে। ঠিক হয়, যে হারবে সে রেডিওর ধারে আঁকা ঘড়িটি হবে। জিতবে যে। তার গড়ন হবে অবিকল মন্তেকার্লো।
শুভ কাজে দেরি করতে নেই ... পা চালানো যাক ব্রিজহ্রদের দিকে।
এমন পিং-পং যার আচরণ! তার জন্যে তো একটু দুর্বলতা থাকবেই। সেই কোন কবেকার নাবালিকা চলাফেরা। একটু তো খলবল ছড়াবে। লক্ষ্মীটি কোক-ওভেন। একবার ঝাঁঝে মিশে যাও আমার। তাহলেই সকল গ্রাম্যতা রম্যতা লোপাট। সামনেই দিগন্ত পেরিয়ে একটা ষ্টীল-মরাল। আমার বন্ধু হয়ে যায় রোজ রোজ।
এখানে সারা বছর ভয়ঙ্কর গরম। শীত বলে কিছুই নেই। কখনো হলকা। তাপমত্রার শজারু ... কাঁটার মতো কিছু একটা। যেন আরামদায়ক পরকীয়া... যেন একমাত্র টেকনিক্যাল কারণেই জমে ওঠেনি প্রেমের নৃতাত্ত্বিক পরিচয়। লিবিডো প্রবল যদিও। পাহাড়ে-উপত্যকা আর প্রায়-সমতলের জিনগত পার্থক্যও নানাবিধ।
তবু ভিজে ওঠে। এককালীন। প্রিন্ট আউটের স্বর। ঠিকরে ওঠে তুংগভদ্রা। আমার ভারি ব্যাক্তিগত। এই প্রবাসে সে আমার সোসিও-ইকনোমিক বাড়বাড়ন্তের খনিজ চ্যাপ্টার। আসবার কাঠকুটো, দেদার শতাব্দী পুরনো রাজসাম্রাজ্য। বিজয়নগরের সানগ্লাস খুলে। চোখের গিয়ার পালটে প্রায়ই পৌঁছে যাই তার ব্যারিটনগ্রন্থ অবধি। গ্যালপযুক্ত মুখরতায়।
মুগ্ধ হই। শুধাই
... তুমি কি পাখি? তাহলে তোমার জল কই? জলের ডানা? জলের ইমেজ? জলের ব্রেইলি? তোমার টগবগ কেন বুঝতে পারিনে তুঙ্গ ...
কী করে একটা প্রজাপতি ... দু ভাগ তিন ভাগ এমনকি চার অঞ্চল হয়ে যায় তোমার সাঁতারে? সাইক্লোন আসে যায় নোটেশন বেজে ওঠে। বেজে ওঠে মথের ফেব্রিক, কিন্তু গায়ে লাগে না তেমন করে। ফড়িঙের ভ্রমর। নিচু নিচু মরনিং ওয়াকের কিনারায় চপলমতী সব পালক।
আসল-নীলকালারে তৈরি মেট্রিকটন। প্রাকৃতিক ওয়েব-ম্যাগ ...
হাজার দরাদরি করেও। এদের ক্লিঙ্কগুলি খুঁজেই পাই না ... তার বদলে মাইল তিনেক বক্সিংরিং। অখিল-গ্রিলের রোয়াক। ডাকে আমাকে।
বলে। ছবি আঁকো, কচি কচি তরঙ্গ-অচিন। নিজের বদলটুকু বদলে ফ্যালো। ছবিআঁকো। ছবিআঁকো আসলে একটা দারুন মজার ক্রেয়ন। বাহামনি কিংডমের চাইতেও অনেক বেশি দমদার এক রূপকথা ... পড়তে বসি। গা খুলে তাকে পরতে বসি।
প্রতিটি লেফট টার্নের পরে যখন টানেল বেজে ওঠে।
একটু থমকাই। চমক সামান্য। পেরিফেরির অর্গল কি গ্যাছে খুলে? আমাকে কি কেউ ভুরু নাচিয়ে ডাকছে? আসছে কাছে? তখন ... ঠিক তখুনি একটা তন্দ্রা আর একখানা আড়মোড়া। জড়াজড়ি শুরু করে তীব্র। আমারি রক্তের মধ্যে দুজনে শুরু করে উদোম-সাহিত্য- সভা। নূরের সাথে নূর টুং আর টাং। মৃত্যু নাই... মৃত্যু নাই ... ঝংকার শুধু যতি।
ভোরদিকে... টের পাই। তালে তালে ত্রিপল উঠেছে উঠেছে দুলে। কোপার্নিকাসের রাজসভায়।
তুংগভদ্রার মুখোমুখি হয়েছে তুংগভদ্রা। বাদবাকি দলিল-দস্তাবেজ ... সবই ‘আউট অফ প্রিন্ট’...
No comments:
Post a Comment