তিনটি কবিতা : অলোক বিশ্বাস
এইকথা সেইকথা
বিরহ বৃদ্ধির সময় কারুবাসনাও বৃদ্ধি পায়, ধুলোর স্তরে স্তরে গড়াবে বিদ্যুৎ
। বিরহের
কণ্ঠগুলি সাঁতরে সাঁতরে চাঁদে গিয়ে ব্রাউজিং করে । পায়ে রক্ত ঝরে ঘেঁষপাথরের
ধাক্কায়,
লোমফোঁড়া হয় শ্রাবণ ধারায় । অনন্ত কালো মেঘ আর অঝোর
বৃষ্টিতে
ডুবে যেতে পারে কদমফুলের ননস্টপ গন্ধ । বিরহের দিনে টেবিলভরা সাইকোলজি
কী এমন দোষ করেছে । ওই দ্যাখো ফোর হুইলারের গতি বাড়তে বাড়তে বরফতুঙ্গ
পাহাড়ে এসেছে । পাহাড়ের সূর্যোদয়ে কিলবিল করা রঙিন মাছ । বিরহ যায় বিরহ
আসে, বিরিয়ানির অঞ্চল আমি কখনো উপেক্ষা করি না । রাজপথে উড়ে বেড়ানো
কৃষ্ণচূড়াগুলিকে যাতায়াতের দরজার পাশে সাজিয়ে রাখি । বিরহকে ভাবি আত্মীয়,
বিরহকে ভাবি আমার বন্ধুসুজন । ডিজিটাল বাস করি বিরহের আনাচে কানাচে ।
আমার ডায়রি থেকে
আমার ভেতরে ঘোরাফেরা করছে আগুন
কাপ প্লেট ছেনি বাটালি হাতুড়ি ও সমুদ্র থেকে উঠে আসা আগুন
নদী জলপ্রপাত শঙ্খচিল বগুড়া চট্টগ্রাম শাহবাগ থেকে সৃজন হওয়া আগুন
উচ্চারণের ভেতরে ভেতরে, উত্তরাধিকারের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে ।
কোনো জলকামান বা ব্যারিকেড দিয়ে আগুনের প্রবাহ স্তব্ধ করা যাবে না ।
কোনো অনুদান বা ট্যাবু বা টোটকায় ফিরিয়ে নিতে পারবো না
সুজলা সুফলা সূর্যের অমিত্রাক্ষর প্রবাহগুলি ।
অঙ্ক সমাধান করার পদ্ধতি থেকে তুলে নিচ্ছি তীব্র ঘর্ষণ
হামিং বার্ডের দ্রুত ডানার ওঠানামা ছড়িয়ে পড়ছে আমার প্রত্যেক স্টেশনে
হয়তো কোথাও এখন অডিশন দিচ্ছে সুমন বা স্বাগতালক্ষী, আর তাদের দ্রোহকণা
উড়ে এসে পড়ছে হৃদয়ের অনুভুমিক স্তরে স্তরে
চোখের অভিযোজনে সাহায্য করছে যতো আলো যতো অন্ধকার
তাদের আমি বিভিন্ন পরিসর ঘুরে আসা আগুনের কণা বলে ডাকি ।
লাতিন আমেরিকা থেকে আগুন তুলে এনে বসিয়েছি টেবিলে, আমার
প্রতিবিম্বগুলিতে, আমার স্থির ও অস্থির চিত্রে ।
তড়িৎ শক্তির সঙ্গে প্রতিদিন অভিযোজন হচ্ছে আমার ।
আমি হতে চেয়েছি স্থানান্তরিত হওয়ার যোগ্যতাসমেত এক তড়িৎ কিশোর ।
যে কোনো উচ্চারণের আগে ও পরে কোন কোন রাসায়নিক কনসার্ট
কিভাবে কাজ করে তা আমি বারবার পরীক্ষা করে নিতে চেয়েছি
গঙ্গা ও পদ্মার ধ্বনি সহকারে । ইরাবতী ব্রহ্মপুত্র মেঘনা ও যমুনার
প্রবাহের আগুন সমস্ত পেন্ডুলামে
দোলাচ্ছে অবিরাম সমীকরণ ।
আয়নার হর্ষ
ভাগাড়ের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আয়নার সংখ্যাও
বৃদ্ধি পায় ।
আয়না তো
বাড়ছেই কী করা যাবে । যদি কারো
তা দেখে কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়ে, হাততালির
অন্ত নেই । আয়না তো
দেখছে থুতু পড়ছে চাঁদে, থুতু পড়ছে সূর্যে, বাঁদরেরা
ব্যাপক দাঙ্গা বাধিয়ে বিপন্ন করে তুলছে বসতবাড়ির রোজগেরে
কথাপ্রকৃতি
আপনা থেকে ধুলো উড়িয়ে কাঁদছে কারা, মরাকান্না, ধরতে পারছে না ইঁদুর
ধরেও ধরতে পারছে না নিজেদের চালচিত্রের ফাঁকগুলি । আর
আয়নারা দেখছে
নীল জল কখন কিভাবে লাল হয়ে যায়, লাল জল শুকিয়ে ভুত হয়ে যায় শূন্যে ।
বাচ্চাদের আন্দোলনে আপাত ক্ষতি নেই, বয়স্করা ভিরমি খেলে তীব্র রেখাপাত
স্বাভাবিক সম্পর্কের ওপর ।
কুকথা চলুক, তবে আয়নাকে বিষ দিলে ছলাকলা
হয়তো স্পষ্ট হবে না আর তেমনভাবে, একথা মাথায় রেখেই টায়ারের হাওয়া
শেষ হওয়ার আগেই কল্পনা পরিকল্পনা বদল হয় যাতে ভাগাড়
নিয়ন্ত্রণে থাকে ।
থাকে মাত্র ভাবনা, বাকি নিয়ন্ত্রণ
ভেঙ্গে যায়, আয়নার হর্ষ বৃদ্ধিও রুখতে পারি না ।
চিত্রঋণ – Vladimir kush
No comments:
Post a Comment