।। বাক্‌ ১১৯।। রঙ্গন রায় ।।



পাঁচটি কবিতা : রঙ্গন রায়


আমার বিড়বিড় করা কথাগুলি
দেখো, আমরা কেমন পরস্পরের থেকে ক্রমশ
দূরে সরে যাচ্ছি।
একে অপরের শরীরে যতটুকু ভালবাসা ছিল
ভাসিয়ে দিয়েছি সোশ্যাল সাইটে...
তুমি আমার খুব কাছে আছো
তবু উষ্ণতা শব্দ , আদানপ্রদান কমে গেছে কত;
মা এখন যতটা দূরে চলে গেছে
বাবাও ঠিক ততটাই হয়তো,
এই অপূর্ব বিছানায় আমি বিশাল শূন্যতাকে
জাপটে রয়েছি শুধু

মাত্র উনিশ বছর বয়সে মৃত্যু চিন্তা ভালো নয় ,
এখন সন্ধ্যেবেলা রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছে
প্রেমিক - প্রেমিকা,
পুরনো বন্ধুর সাথে হঠাৎ দেখা হয়ে যাচ্ছে
রাস্তার ওপারে -
আমাদের সমস্ত শব্দ ভেদ করে মানুষ হেঁটে যাচ্ছে
অথচ বেঁচে থাকাটা আমার কাছে
ইয়ার্কি ছাড়া আর কিছু নয়

যতটুকু দেখেছি এই বেঁচে থাকা , বুঝেছি
পৃথিবীতে ভালো বাড়িটির খুব অভাব,
হয়তো অর্ধেক মানুষ খুঁজে পায়না মনের মত ঘর
যার চালের ফুটো দিয়ে গড়িয়ে নামে সংসার ...
যারা পায় , তাদের আমরা প্রেমিক বলে চিহ্নিত করি

মির্জা গালিব আমাদের ক্ষমা করতে শিখিয়েছেন।
জানি , মৌন থেকেও আমরা কত কথা বলে দিতে পারি ,
এইযে গতে বাঁধা জীবন -'আমার ভাল লাগেনা'
তবু ইদানীং আমি সব কিছু ভালো লাগাতে শিখেছি -
প্রতিটি ঘটনাই আসলে গালিবের কবিতার মত

তোমার মুখের প্রতিটি ছত্রে ফুটে ওঠা
এই ক্লাসিক আলো , আমি ছাড়া আর কেউ
দেখেনি পৃথিবীতে ; এই আলো দেখতে আমি
শান্তিপাড়া অবধী সাইকেল চালাতে পারি ,
লোকে আমাকে 'অসামাজিক' বলে -
পুরনো ক্যালেন্ডারের মত চাপা পড়ে গেছি ...
এখন বাড়ি ফিরে মা'কে আর চিৎকার করে
ডাকবোনা , সাইকেলের পাম্প ছেড়ে দিয়ে
হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি ফেরাও আশ্চর্য সুখের মত!

লোকে আমাকে অসামাজিক বলুক

সামাজিক লোকেরা ক্লাসিক আলো দেখতে পায়না।

   চিত্রঋণ – Alexy Prefontaine


10 comments:

  1. কবিতাগুলো দারুন লিখেছো দাদা

    ReplyDelete
  2. কবিতাগুলো দারুন লিখেছো দাদা

    ReplyDelete
  3. প্রতিটি পছন্দের❤

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যযুক্ত জ্যোতিদাদা

      Delete
  4. ।।অপূর্ব ১ আওয়াজে যেন হেঁটে যাচ্ছে কবিতার কাগজগুলো।।

    ReplyDelete
  5. ।।অপূর্ব ১ আওয়াজে যেন হেঁটে যাচ্ছে কবিতার কাগজগুলো।।

    ReplyDelete
  6. রঙ্গন এই কবিতারা তোমার এক্সপিডিশন।একটা চিন্তনের লিনিয়ার।আমাদের নিজস্বতার বাইরে কিছু হয়না।আবার সব জড়িয়ে নিয়েই একটা নিজস্ব স্কেল।-শানু

    ReplyDelete