চন্ডালের ভোর
আমার ভেতর ক্রমাগত সূর্যাস্ত ঘটে যাওয়ায়
বর্তমানে আমি লাল অন্ধকার।
তোমরা ভোরের অপেক্ষায় যারা আছ
তাদের আমার বুকভরা শুভেচ্ছা। যেমন, সূর্য
লাফ দিয়ে সমুদ্র-অতল থেকে ঝাউশীর্ষে ওঠে,
তারপর মধ্যগগনে দাঁড়িয়ে বিরাট চুল্লিটা
জ্বেলে দেয়
তোমরাও সেভাবে লাফ দাও, জ্বালো, জ্বালাও বারিধি
দীপ্যমান করো। ব্রাহ্মণ হয়েও আমি ব্রাহ্মণের
অধিকার
হারিয়েছি। জপ, তপ, অধ্যায়ন, অধ্যাপন তো নয়ই,
গায়ত্রী মন্ত্রও ভুলে গেছি। পৈতে? (উপবীত বলতে
সাহস নেই ),
একটা আছে বটে, তা সে পিঠ চুলকানোর জন্য।
আমি পঙক্তিভোজনে বসি না। লোকে বলে,
আমার শরীরে একরকম ফাঙ্গাস জন্মেছে, যা বড়
ছোঁয়াচে। ডাক্তার প্রশ্ন করে, কবে থেকে
আপনার ভিতরে সূর্যাস্ত আরম্ভ হয়েছে?
মনে করতে পারি নি। কে জানে হয়তো পূর্বজন্ম
থেকে!
আমি যেন মস্ত ডাল, ভেঙে পড়ে আছি,
লতাপাতার জঙ্গলে মাথার ওপর দুপুরেই রাত্তির।
ঐ শরীরে একটা চোখ আছে, কিন্তু তা জেগে নেই,
চাহনিও নেই, শুধু একটা চোখ, চোখের মতন
দেহসংস্কারবশত
যেমন তেমন মুখে লেগে আছে
একটা শরীরে এত সূর্যাস্ত? সে দেহে কখনো কি
সুখ বাস করে? দুঃখ ঘর করে? পরিত্যক্ত পান্থশালা
কেউ তৈরি করেছিল একদিন, তৈরির সময়েই সে মন ফিরিয়ে
নেয়।
ফলে যা যা হয়...
মাটির মেঝেতে স্যাঁতস্যাঁতে ভাপ ওঠে, ঘুণপোকারা
শরীর জুড়ে
দীর্ঘমেয়াদী খাদ্যের খোঁজ পায়।
ছিলাম ব্রাহ্মণ, হয়েছি চন্ডাল। চন্ডালের ভোর নেই,
সবটাই রাত্তির। ...এই অবসরপ্রাপ্ত জীবনই কি
আমার কর্মজীবন?
অসাধারণ বললেও কম বলা হবে। অবশ্য কবিতাকে আমরা ভালো লাগলে আর কিভাবেই বা জানাতে পারি ভালো লাগার কথা। ভাষা নেই।
ReplyDeleteসাংঘাতিক কবিতা ❤
ReplyDelete